বিআইডব্লিউটিএ’তে চলছে সিবিএ নেতাদের ত্রাসের রাজত্ব

 

বিআইডব্লিউটিএ’তে সিবিএ নেতাদের ত্রাসের রাজত্ব চলছে। সাধারণ কর্মচারী/কর্মকর্তারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) তে শ্রম আইন অনুযায়ী ৩ টি ট্রেড ইউনিয়নের বেশি ট্রেড ইউনিয়ন করার আইন না থাকলেও বিদ্যমান আইন না মেনে বেআইনীভাবে (শ্রম আইনানুযায়ী পূর্বের ইউনিয়ন হতে লিখিত পদত্যাগ দাখিল না করেই পূর্ববর্তী ইউনিয়নের সদস্যদের দিয়ে জোরপূর্বক ডি ফরমে স্বাক্ষর নিয়ে) সম্প্রতি (২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে) বিআইডব্লিউটিএ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন নামে চতুর্থ ট্রেড ইউনিয়ন হিসেবে নতুন একটি ইউনিয়ন গঠিত হয়। যার রেজিস্ট্রশ নং-বি-২১৭৬, এরপর ইউনিয়নটি জাতীয় শ্রমিক লীগের অন্তর্ভুক্ত হয়।

ইউনিয়ন গঠনের দুইমাস পরে (এপ্রিল মাসে) সিবিএ নির্বাচন চেয়ে ইউনিয়নের পক্ষে শ্রম দপ্তরে আবেদন করা হয়। এসময় একই ব্যক্তি বর্তমান ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি পদে থেকেও পূর্বের ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সিবিএ নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবেনা মর্মে পত্র দেয়, যার ফলে বর্তমান ইউনিয়ন (রেজিঃ নং-বি-২১৭৬ কে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সিবিএ হিসেবে ঘোষণা করে শ্রম দপ্তর।এই সিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ১৯৯১ সালে অনুরূপ ভাবে গঠিত বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (রেজিঃ নং-বি-১৯২৮) যা জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের অন্তর্ভুক্ত ছিল, তিনি উক্ত ইউনিয়নটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি সিবিএ’র সাধাররণ সম্পাদক হবার পরে দৈনিক যুগান্তরসহ বেশ কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদের শিরোণাম হয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন।

সাধারন সম্পাদক হবার পরই তিনি নিরীহ কর্মচারীদের জিম্মি করে টেবিল বানিজ্য, বদলী বানিজ্য এবং শাখা কমিটি গঠনের নামে প্রায় কোটি টাকার বানিজ্য করেন। তার নির্যাতন থেকে দলীয় নেতা-কর্মীরাও ছাড় পাচ্ছেননা। নব গঠিত এ সিবিএ’র বয়স মাত্র ১ বছর হলেও জিএস রফিকুল ইসলাম গাড়ি কিনেছেন ৩ টি, সর্বশেষ কিনেছেন ৩৬ লক্ষ টাকা দামের নোয়া গাড়ী, বিআইডব্লিউটিএ’র জায়গা বেআইনীভাবে নিজের ছেলের নামে ডক ইয়ার্ডের কথা বলে নাম মাত্র মূল্যে লীজ নেওয়াসহ, আরিচায় বেশ কিছু জমির মালিক বনে গেছেন। শ্রম আইন অনুযায়ী ইউনিয়নের নেতাদের বদলী করা না গেলেও তিনি গায়ের জোরে বদলী করেছেন। তার কথা না শুনলেই তিনি পরিষদের নেতাদের বহিষ্কার করেন।

কেন্দ্রীয় পরিষদের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক, দপ্তর ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক, নারায়ণগঞ্জ শাখার যুগ্ম আহবায়ক’কে অগঠনতান্ত্রিক এবং বেআইনীভাবে বহিষ্কার করেন। দপ্তর ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক কে অবৈধভাবে বহিষ্কার করলে তিনি বিজ্ঞ শ্রম আদালতে বহিষ্কার আদেশ চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত বহিষ্কার আদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন, শ্রম আদালতের মামলা নং-বিএলআর ৫৮৪/২০১৭।পূর্ববর্তী ইউনিয়নের কল্যাণ তহবিলের নামে জমা থাকা টাকা বর্তমান ইউনিয়নের কল্যাণ তহবিলের নামে জমা হবার পর সাধারণ সম্পাদক উক্ত (দশ লক্ষ) টাকা উত্তোলন করতে বললে তহবিলের সদস্য সচিব দিতে অস্বীকার করলে তিনি অফিস চলাকালীন সময়ে তাকে শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করেন। ইতোমধ্যে কল্যাণ তহবিল হতে কিছু টাকা উত্তোলিতও হয়েছে। এ ব্যাপারে মতিঝিল থানায় একটি জিডি করা হয়েছে, যার নং-২২৪১, তারিখ-৩০-০৪-২০১৭।

শ্রম আইন অনুযায়ী কোন ইউনিয়ন বা সিবিএ অফিসের কোন নিয়োগে হস্তক্ষেপ বা চাপ প্রয়োগ করতে পারবেনা বললেও তিনি ইউনিয়নের প্যাডে নিয়োগ প্রদানের জন্য তালিকা দিয়ে থাকেন এবং প্রতিটা নিয়োগে লাখ লাখ টাকার বানিজ্য করেন। গত ১৭-০৭-২০১৭ অফিস চলাকালীন সময়ে অপর ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সনজীব কুমার দাস’কে সিবিএ’র সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে বেদম মারপিট করা হয়। এব্যাপারে সিএমএম কোর্টে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার নং- সিআর ১৫৯৭/২০১৭, তারিখঃ ২৩-০৭-২০১৭। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আপনাদের অনুসন্ধানীমূলক প্রতিবেদনে এ ঘটনাটি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে ভুক্তভোগী কর্মচারীরা রেহাই পাবে।

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

%d bloggers like this: