প্রতারনার মাধ্যমে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ২৮ জন হজ্ব যাত্রীর কাছ থেকে ৭৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে এক জামায়াত নেতা ও তার সহযোগী দালালরা। ফলে এবারের হজ্ব যাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পরেছে ওইসব হজ্ব যাত্রীদের।
তারা প্রতারক জামায়াত নেতা ও ট্রাভেলস্ মালিককে খুঁজে পেতে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে প্রতারিতদের পক্ষ থেকে আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার রামপুরা বনশ্রী এলাকার হুমাইয়ারা হজ্ব ট্রাভেলস্’র নামে এলাকার চিহ্নিত ব্যক্তিরা (দালালেরা) এবার বরিশালের অসংখ্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এর মধ্যে গৌরনদীর টরকী বন্দর আদর্শ জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও প্রভাবশালী জামায়াত নেতা মাওলানা আবুল খায়ের, টরকী বন্দর এলাকার বাসিন্দা দিদার হাওলাদার, কসবা গ্রামের মামুন খান গৌরনদীর বিভিন্ন এলাকার ২৮জন হজ্ব যাত্রীদের কাছ থেকে সর্বমোট ৭৫ লক্ষ টাকা উত্তোলন করেছেন। সূত্র মতে, এসব দালালদের সাথে কতিথ ওই ট্রাভেলস্’র ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম ও মোঃ রাসেদের গভীর সম্পর্ক ছিলো।
দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত গৌরনদীর কসবা গো-হাটের ইজারাদার ও প্রতারিত হজ্ব যাত্রী আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার জানান, তিনি ও তার স্ত্রী বিউটি বেগম এবার হজ্বে যাওয়ার জন্য স্থানীয় দিদার হাওলাদারের কাছে সর্বমোট ৬ লক্ষ ২ হাজার টাকা দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে তাদের ফ্লাইট হওয়ার কথাছিলো।
সে মতে তারা সোমবার রাতে ঢাকায় পৌঁছেন। মঙ্গলবার সকালে রামপুরার বনশ্রী এলাকায় ট্রাভেলস্’র ঠিকানা অনুযায়ী অফিসে গিয়ে দেখতে পান সেখানে এ নামের কোন অফিস নেই। এতে দিশেহারা হয়ে তারা দালাল দিদারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে সে (দিদার) জানান,
তিনি ইমাম আবুল খায়েরের কাছে টাকা দিয়েছেন। এর বেশি কিছু সে বলতে পারবেন না। বলেই ফোনটি বিচ্ছিন্ন করে তা বন্ধ করে দেয়ায় অনিশ্চিত হয়ে পরেছে তাদের এবারের হজ্ব যাত্রা।
একই ভাবে প্রতারনার স্বীকার হয়েছেন টরকী এলাকার মোসলেম হাওলাদার, আব্দুল কাদের হাওলাদার, কটকলের আজিজ আকন, সুন্দরদী গ্রামের ইয়াকুব আলী ঘরামী, সোনালী ব্যাংক গৌরনদী শাখার অবসরপ্রাপ্ত ম্যানেজার আব্দুর রশিদসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ২৮ জন হজ্ব যাত্রী।
এরা সকলেই দালাল দিদার হাওলাদার ও মামুন খানের প্ররোচনায় বিশ্বাস করে মাওলানা আবুল খায়েরের কাছে সর্বমোট ৭৫ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। তাদের সকলেরই মঙ্গলবার রাতে ফ্লাইট হওয়ার কথা বলে ট্রাভেলস্’র ঠিকানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়েছিলো।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে উল্লেখিত দালালসহ মাওলানা আবুল খায়ের ও তার পরিবারের সদস্যরা আত্মগোপন করেছে। ঠিকানা মোতাবেক পাওয়া যায়নি হুমাইয়ারা হজ্ব ট্রাভেলস্ নামের প্রতিষ্ঠান। প্রতারিত হজ্ব যাত্রী আব্দুল কাদের হাওলাদার জানান, নিরুপায় হয়ে তারা প্রতারক জামায়াত নেতা, দালাল ও ট্রাভেলস্ মালিককে খুঁজে পেতে আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন।
উল্লেখ্য, গৌরনদীর মাহিলাড়া এলাকায় মাওলানা আব্দুল আজিজ নামের প্রভাবশালী এক জামায়াত নেতা হজ্বে পাঠানোর জন্য ট্র্যাভেলস্’র দালাল হিসেবে কাজ করছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে।