হেফাজতে ইসলামের ৫ মের অবরোধের পিছনে জামায়াতের গোপন পরিকল্পনা অনুযায়ী শাপলাচত্বরে অবস্থান করে পরদিন ৬ মে ভোরে ব্যাংকসমূহ লুট করাসহ সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র ছিল। অবস্থান সফল না হওয়ায় এ জন্য প্রাপ্ত বিপুল অর্থের ভাগাভাগী নিয়ে ঢাকা মহানগর হেফাজত এবং কেন্দ্রীয় হেফাজতের মধ্যে জামায়াতঘেঁষা নেতাদের মধ্যে চলছে চরম দ্বন্দ্ব।
অর্থের ভাগ-বাটোয়ারা সঠিক না হওয়া, লালবাগ, কামরাঙ্গীর চর ও বারীধারা মাদরাসার নেতারা পৃথক পৃথকভাবে বৈঠক করাসহ বিবৃতি দিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় রমজান মাসে হোটেল পূর্বানীতে ইসলামী ঐক্যজোট (একাংশ) আয়োজিত মুফতি আমিনী স্মরণে আলোচনা ও ইফতার পার্টিতে বারিধারাকেন্দ্রিক নেতাদের দাওয়াত দেওয়া হয়নি। এরপর থেকে বিবৃতিও দেওয়া হচ্ছে পৃথক পৃথকভাবে।
বুধবার হেফাজতে ঈমান বাংলাদেশ-এর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দলের বার্তা প্রেরক আব্দুল মোস্তফা উপরোক্ত তথ্য জানান। হেফাজতে ঈমানের প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়, লালবাগ মাদরাসার হেফাজত নেতাদের বাদ দিয়ে একাধিক বৈঠকও হয়েছে বিভিন্ন স্থানে। গত সোমবার কিল্লার মোড়ে মাওলানা জাফরুল্লাহ খান ওরফে আনোয়ার রাজাকার কর্তৃক জামায়াত থেকে প্রাপ্ত অর্থে কামরাঙ্গীর চর মাদরাসায় অনুষ্ঠিত ইসলামী দলসমূহের বৈঠকের আড়ালে হেফাজত নেতারা বৈঠকে লালবাগ মাদরাসার হেফাজত মহানগর নেতারা উপস্থিত ছিলন না। লালবাগ মাদরাসার হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে অন্যান্য নেতাদের অভিযোগ তারা আহমদ শফীকে নিয়ন্ত্রণে রেখে হেফাজতের শান্তিপূর্ণ অরাজনৈতিক কর্মসূচিকে জামায়াত-শিবিরের সহযোগিতায় হিংসাত্মক ও জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনে পরিণত করেছিল। তারা সরকারের পতন ঘটিয়ে ৬ মে দেশের শাসনভার তাদের হাতে নিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। আর এ জন্য ৫ মে দিবাগত রাতে বিএনপির অফিসে ছিল মন্ত্রী সভা গঠনের লক্ষ্যে রাতভর খাওয়া দাওয়ার ধুম।
হেফাজতে ঈমানের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানান হয়, এ চক্রান্তের জন্য জামায়াত ও বিএনপির পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ ছিল লালবাগ মাদরাসার হেফাজত নেতারা এবং কামরাঙ্গীর চর মাদরাসার ছদ্মবেশী ঘাতক রাজাকার নতুন নাম ধারণকারী মাওলানা জাফরুল্লাহ খান ওরফে আনোয়ার রাজাকারের নিয়ন্ত্রণে। হেফাজতের অবস্থানের প্রেক্ষিতে সৃষ্ট ঘটনার পর থেকে তারা ছিল পালাতক ও নীরব। সরকারের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে এরা এখন কচ্ছপের মতো মাথা বের করে পুনরায় স্বরূপে প্রকাশিত হতে শুরু করেছে পৃথক পৃথক বিবৃতি এবং আলোচনা বৈঠকের মাধ্যমে। ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ও অর্থের ভাগাভাগিই এর মূল কারণ।