জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবির কর্তৃক ছাত্রী সংস্থার সদস্যদের যৌন সম্ভোগের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অনেকে টাকার অভাবে, অনেকে নিজেদের অজান্তে যৌন বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়ে। আবার অনেকে শিবিরের নেতাকর্মীদের প্রেমের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে ছাত্রী সংস্থার সদস্য হয়ে পতিতায় পরিণত হয়।
শীর্ষ নেতৃবৃন্দ কারাগারে থাকায় বিশেষত গত দুই বছর ধরে জামাত ও শিবিরের নেতাকর্মীদের গা ঢাকা দিয়ে থাকার কারণে ছাত্রী সংস্থার সদস্যরা যৌন বাণিজ্য শুরু করেছে। এদের অনেকে টাকার চেয়ে নিজেদের চাহিদা মেটাতেও পেশাগতভাবে পতিতা হচ্ছে। হোটেলে কিংবা রাজনৈতিক কারণে পুলিশের হয়রানি বা ফ্ল্যাট বাড়িতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ হোমরা চোমরা ও মাস্তানদের উৎপাতে বাধ্য হয়ে হোম সার্ভিসে পতিতাবৃত্তি শুরু করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রী সংস্থার ‘স’ অদ্যাক্ষরের এক নেত্রী জানালেন, খদ্দেরের কল পেলে বাসায় যাই। আগে জামায়াত নেতাদের কথা মতো নেতাদের বা ক্রায়েন্টদের বাসায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল। তবে আগে কমিশন দিতে না হলেও এখন মাস্তান ও দালালদের কমিশন দিতে হয়। কারণ এ পেশার নেপথ্যে রয়েছে শক্তিশালী দালাল চক্র।
পথিকদের হাতে ছাত্রী সংস্থার পদবী উল্লেখ করা ভিজিটিং কার্ড ধরিয়ে দেয় তারা। তাছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট, বাসস্ট্যান্ড, বাজার, অলিগলি ও অফিস-আদালতের সামনে দালালরা এসব কার্ড বিলি করে। যে কোন প্রয়োজনে ফোন দেয়ার আহ্বান জানিয়ে মুহূর্তেই জনতার ভিড়ে অদৃশ্য হয়ে যায় তারা। ছাত্রী সংস্থার আরেক সদস্য জানায়, বিভিন্ন সভা সমাবেশেও কার্ড বিলি করা হয়। হেফাজতের কর্মসূচীর সময় প্রায় ২০ হাজার ভিজিটিং কার্ড বিলির পর থেকে হোম সার্ভিসের চাহিদা বেড়ে গেছে। ব্যবসাও রমরমা।
পতিতাদের ভিজিটিং কার্ডে মধ্যস্থতাকারীদের মোবাইল নম্বর দেয়া থাকে। পল্টন, ফার্মগেট, শাহবাগ, কাকরাইল, মালিবাগ, মতিঝিল, সায়েদাবাদ, গাবতলী এলাকায় এ তৎপরতা বেশি। ব্যস্ততম গাড়িতে যৌন চিকিৎসার নামের হ্যান্ড বিলও বিলি করা হয়।
ছাত্রী সংস্থার যৌনকর্মীরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাদের পরিচিত মানুষের মাধ্যমে বাসায় খদ্দের পেয়ে থাকে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ফ্ল্যাট বাসায় ভিআইপি যৌন ব্যবসা নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে মহাখালী ডিওএইচএস, গুলশান, বনানী লালমাটিয়া, দিলু রোড, ইস্কাটন রোড, সেন্ট্রাল রোড, মোহম্মদপুর, রামপুরা, শান্তিনগর, উত্তরা, কাকলী, কালাচাঁদপুর এলাকায় এ ব্যবসা চলছে। তবে ভিআইপি এলাকায় যৌন ব্যবসা পরিচালিত হয় বিশেষ গোপনীয়তায়। সেখানে যাতায়াত করে বিশেষ ধরনের খদ্দের।
ছাত্রী সংস্থার প্রায় সকলেই স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে। এক হোটেল বয় জানায়, ক্ষমতায় না থাকায় এবং পুলিশি হয়রানির কারণে ছাত্রী সংস্থার পতিতারা ভদ্র ঘরের পরিচিতি আর ধরে রাখতে পারে নি, যৌন ব্যবসার প্রতি ঝুঁকে পড়েছে।
অবস্থা ভেদে ছাত্রী সংস্থার যৌনকর্মীদের আয় সপ্তাহে ২৫ হাজার টাকা। কমিশন দিতে হয় ১৫ হাজার টাকা। আগে আয় অনেক বেশি ছিল এবং মান সম্মানের হানিও হতো না বলে তারা জানায়। তবে হোম সার্ভিসে ব্যবসা শুরু করার পর থেকে পুলিশ তাদের জন্য কোন সমস্যা নয় বলে জানা যায়। তবে পতিতাবৃত্তি করার সাথে সাথে দলীয় কর্মকাণ্ডেও সম্পৃক্ত রয়েছে।
উল্লেখ্য ইসলাম প্রচারের নামে কেন এ দেহ ব্যবসা করে জানতে চাওযা হলে শীর্ষ এক নেত্রী বলেন, আমরা পলিটিক্যাল আইডিওলজি প্রচার করি। তাছাড়া প্রতিদিন তওবা করে থাকি।