জালিয়াত ২৭৩ শিক্ষকের এমপিও কেড়ে নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। এরা বিভিন্ন সময়ে অবৈধ পন্থায় এমপিওভুক্ত হয়েছিলেন। সূত্র জানায়, এ অবৈধ কর্মকাণ্ড তদন্তে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জানা গেছে, বিগত কয়েক মাসে মোট চার দফায় এসব শিক্ষকের এমপিও কাটা হয়। এরমধ্যে প্রথম দফায় ২৭, পরে ১৩, তৃতীয় দফায় ৫২ ও সর্বশেষ মঙ্গলবার ১৮১ জনের এমপিও বাতিল করা হয়। এসব এমপিওই অবৈধভাবে রহস্যজনক কারণে কেবল চূড়ান্তই হয়নি, প্রত্যেকে বেশ কয়েকমাস এমপিওর অর্থ উত্তোলনও করে।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা হিসেবে সরকার যে অর্থ দেয় তার নাম এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার)। সারাদেশে সাড়ে ২৮ হাজার স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার প্রায় ৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী বর্তমানে এই সুবিধা পাচ্ছেন।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা হিসেবে সরকার যে অর্থ দেয় তার নাম এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার)। সারাদেশে সাড়ে ২৮ হাজার স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার প্রায় ৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী বর্তমানে এই সুবিধা পাচ্ছেন।
সাধারণত নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির কাজ মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি করে থাকে। এর বাইরে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে নবনিয়োগ, ইনডেক্সধারী, শূন্যপদে নিয়োগের ক্ষেত্রে এমপিওগুলো মাউশি করে থাকে। জানা গেছে, এক্ষেত্রে তালিকা প্রণয়নে মাঠপর্যায়ে জেলা শিক্ষা অফিস ও মাউশির আঞ্চলিক অফিসের ভূমিকা থাকে। জেলা শিক্ষা অফিস থেকে তালিকা পাঠানো হলে তা চূড়ান্ত করার আগে মাউশির সংশ্লিষ্ট শাখা যাচাই-বাছাই করে। সূত্র জানায়, গত কয়েক মাসে চার দফায় যে ২৭৩ জনের এমপিও কাটা হয়, তার কোনোটি জেলা অফিস থেকে পাঠানো হয়নি। আবার কিছু রয়েছে মাউশির সংশ্লিষ্ট তালিকায়ও তার নথিপত্র নেই। কিন্তু এমপিওর অর্থ ছাড়ের তালিকা প্রণয়নে দায়িত্ব পালনকারী মাউশির কম্পিউটার শাখা রহস্যজনক কারণে এসব শিক্ষক-কর্মচারীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।
মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন জানান, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে ওইসব শিক্ষক এমপিও পেয়ে যান। অনুসন্ধান করতে গিয়ে এসব চিহ্নিত হয়েছে। তিনি জানান, এ ধরনের আরও কেউ রয়েছে কিনা, তা চিহ্নিত করার কাজ চলছে। পেলে সেগুলোও বাতিল করা হবে। মহাপরিচালক জানান, এমপিওর ক্ষেত্রে এই দুর্নীতি তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন সদস্যের কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে মাউশির পরিচালক (মনিটরিং) অধ্যাপক দিদারুল আলমকে। এছাড়া উপপরিচালক (কলেজ-১) এটিএম মইনুল হোসেন এবং উপপরিচালক (কলেজ-২) মোঃ মেজবাহ উদ্দিন সরকারও কমিটিতে আছেন। তিনি আরও জানান, এ ঘটনার পেছনে প্রধান শিক্ষক থেকে শুরু করে অনেকেই থাকতে পারেন। কমিটি তদন্ত করতে গিয়ে অনেক কিছু পাচ্ছে। এতে যাকে দোষী হিসেবে পাওয়া যাবে, তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেয়া হবে।
জুলাই মাসের এমপিও : ওদিকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীদের জুলাই মাসের এমপিও ছাড় করা হয়েছে। বুধবার ওই অর্থ অনুদান বণ্টনকারী চারটি সরকারি ব্যাংক অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় এবং জনতা ও সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়েছে। মাউশি মহাপরিচালক জানান, ৭ আগস্টের মধ্যে সংশ্লিষ্ট শাখা ব্যাংক থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের জুলাই মাসের বেতন-ভাতাদির সরকারি অংশ উত্তোলন করতে হবে।
মন্তব্য করুন